বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ পূর্বাহ্ন
লালমনিরহাট প্রতিনিধি::
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরটি বিক্রি করে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েও চাকরী মিললো না সেলিম হোসেনের। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে তার নিকট থেকে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তপন সাধু নামে এক প্রতারক। পরবর্তীতে তপন সাধুর এই প্রতারনার সংবাদ প্রকাশ করায় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৫, লালমনিরহাটে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন প্রতারক তপন সাধু।
চাকুরী প্রার্থী সেলিম কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উঃ বালাপাড়া গ্রামের শাহজাহান আলীর পুত্র। প্রতারক তপন চন্দ্র রায় বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র ফোরাম লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি এবং উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের নওদাবাস এলাকার ভুবেন চন্দ্র রায়ের ছেলে।
সেলিমের পরিবার জানান, দেড় বছর আগে তপন সাধু সরকারের সমাজসেবা দপ্তরে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সেলিম হোসেনের নিকট ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দাবী করেন। সেলিম তার বাস্তুভিটা ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি ঘর বিক্রি করে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দেয় বলে জানান সেলিমের স্বজনরা। দীর্ঘদিনেও চাকরির কোন সুরাহা না হওয়ায় তার দেওয়া টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিতে থাকে সেলিম। টাকা উদ্ধারের জন্য স্থানীয় ভাবে কয়েক দফা সালিশও হয়েছে। পরবর্তীতে টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েও ব্যর্থ হয়ে সময় বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর সেলিমের বাড়িতে যায় তপন সাধু।
পরে সেলিম তপন সাধুকে আটক করে স্থানীয় লোকজন, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি সদস্যদের ডেকে আনেন এবং তপন সাধুকে চাকুরির জন্য ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি অবগত করান। তপন সাধু টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে দুই কিস্তিতে পরিশোধের একটি মুচলেখা দিয়ে মুক্ত হন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তপন সাধু দুই সাংবাদিকের নামে কোটি টাকার মানহানিকর একটি মামলা রুজু করেন।
এ বিষয়ে শুক্রবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আব্দুল বারেক ও একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের উঃ বালাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য দীনবন্ধু রায় মুচলেখা দিয়ে তপন সাধুর মুক্ত হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তারা বলেন, সেলিম হোসেন সরকারের সমাজসেবা দপ্তরে চাকরি পাওয়ার আশায় তার বাস্তভিটা এবং প্রধামন্ত্রীর দেয়া ঘরটি বিক্রি করে তপন সাধুকে ২ লক্ষ ৮০ হাজার দেয়। দির্ঘদিন পার হলেও চাকরি না হওয়ায় বিষয়টি সমাধানের লক্ষে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ নিয়ে সেলিমের বাড়ীতে সালিশে বসেছিলাম। সেখানে তপন সাধু ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চাকরির কথা বলে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন । সালিশে তপন সাধু দুই কিস্তিতে টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করে একটি মুচলেখায় স্বাক্ষর করে সেদিন মুক্তি পায়।
এ বিষয় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ আবু বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ২৬ অক্টোবর অবশিষ্ট ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে স্টাম্পে লিখিত অঙ্গীকার করলেও তিনি (তপন সাধু) অঙ্গীকারে ব্যর্থ হলে বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) রাতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জমা করেন ইউপি সদস্যর হাতে।
এ ব্যাপারে তপন কুমার রায় সাধুর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইউপি সদস্য দ্বীনবন্ধু রায়ের নিকট আমার ব্যবহারকৃত একটি মোটর সাইকেল জমা রয়েছে। ‘আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। প্রতিপক্ষের দ্ধারা প্রভবিত হয়ে সাংবাদিক আমার নামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।